সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
একটি মামলাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জকে ফের উত্তপ্ত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উস্কে দিতে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল গতকাল। এদিন জুম’আ নামাজ শেষে ডিআইডি মসজিদ এলাকাতে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল আউয়াল ও একই সংগঠনের নারায়ণগঞ্জের নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের নেতৃত্বে ওই সমাবেশের আয়োজনের কথা থাকলেও শেষতক তারা দুজনেই পিছটান দিয়েছেন। প্রশাসনের চাপ ও স্থানীয় মানুষের ক্ষুব্ধতায় কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ওই সমাবেশ স্থগিত করে হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
এদিকে গেল কিছুদিন ধরেই হেফাজতের আস্ফালনে ক্ষুব্ধ ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা হেফাজতে ইসলামী নেতাদেরকে উগ্র হিসেবে মন্তব্য করে তাদের গণধোলাই দেয়ার কথাও জানিয়েছিলেন। এ নিয়ে শহরজুড়ে একটা উত্তপ্ত পরিবেশ বিরাজ করছিল।
এদিকে আগে থেকেই সমাবেশের ব্যানার পোস্টার ছাপানো হয়েছিলো। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারও করা হয়েছে আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এবং মহানগর উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মামলা প্রতিবাদের বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। কিন্তু জুম’আ নামাজ শেষ হতেই সেই সমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেছে নারায়ণগঞ্জ উলামা পরিষদ।
এদিকে পূর্বের বিক্ষোভ সমাবেশ স্থগিত করেও একই জায়গায়, ফরিদপুরের মধুখালীর পঞ্চপল্লির কালি মন্দিরে আগুনকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনার, নিন্দা জানিয়ে অন্য একটি সমাবেশ ঘোষণা দেয় ওলামা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সেই সমাবেশে হত্যার ঘটনায় অনুষ্ঠিত হলেও মহানগর উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানের বক্তব্যে ঘটনার কোনো স্পষ্টতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুরো বক্তব্য জুড়েই ছিলো সিটি করপোরেশনের দায়ের করা চুরির মামলা কেন্দ্রীক ঘায়েল করা বক্তব্য। মিছিলে তাকে অংশগ্রহন করতে দেখা গেলেও বক্তব্যর মধ্যে তিনি তার মূল উদ্দেশ্য হাসিল করেছেন।
প্রসঙ্গত, গেল ১০ ফেব্রুয়ারি রাসেল পার্কে পার্ক লাউঞ্জ রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় সিটি করপোরেশন দুই মাস পর একটি মামলা করে। মামলায় মাওলানা ফেরদাউসুর রহমানকেও আসামি করা হয়। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন ফেরদাউসুর রহমানসহ হেফাজতে ইসলামের নেতারা। তারা মেয়র আইভীকে নিয়ে অশালীন বক্তব্য দেয়াসহ রাসেল পার্ককে মিনি পতিতালয়ের সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য রাখেন। তাদের এমন বক্তব্য ঘিরে নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভও বিরাজ করছে।